মশলার মধ্যে রসুন ভীষণ উপকারি। রসুন ঠাণ্ডাজনিত হাঁচি, কাশি, সর্দি, নাক দিয়ে পানি পড়া, জ্বর জ্বর ভাব, টনসিল ফুলে যাওয়া এই সমস্যাগুলো দূরে ঠেলে দেয়।
রান্না করার চেয়ে কাঁচা রসুনের পুষ্টিগুণ বেশি থাকে। তবে কাঁচা রসুন সবাই হজম করতে পারে না আর স্বাদ ভীষণ ঝাঝালো তাই নিজের হজম ক্ষমতা বুঝে খান।
রসুন শিরা উপশিরার মধ্যে চর্বি বা চর্বি জাতীয় পদার্থকে জমাট বাধতে বাধা দেয়। ফলে হৃদপিন্ড শিরা উপশিরার দ্বারা সারা শরীরে সঠিকভাবে রক্ত সরবরাহ করতে পারে। এতে উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাডপ্রেসার থেকে মানুষ রক্ষা পায়।
রসুন শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমিয়ে মানুষকে করে দ্বিগুণ শক্তিশালী। হৃৎপিন্ডের জন্য রসুন ভীষণ-ভীষণ উপকারি।
রসুন নিম্ন রক্তচাপের ব্যক্তিদের রক্তচাপকে স্বাভাবিক করতে সাহায্য করে। আর উচ্চ রক্তচাপের রোগীকে ক্ষতিকর পরিণতি থেকে রক্ষা করে।
উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা সপ্তাহে অন্তত দুইদিন একটি করে (পুরো রসুন নয়, রসুনের কোয়া) রসুন খান।
কারণ রসুন খুব গরম খাবার। বেশি খেলে পেট খারাপ হতে পারে। কাঁচা খেতে না পারলে রান্না রসুনও উপকার দিবে।
রসুন রক্তে চিনির মাত্রাকেও নিয়ন্ত্রণে আনতে অবদান রাখে। তাই ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্যও রসুন কার্যকরী। হার্টে রিং পড়ানো, পেস মেকার বসানো, বড় কোন অপারেশনের পরে রসুন রাখে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।
রক্তে আলপিনের মতো একধরনের কৃমিকে মেরে ফেলে রসুন।
রসুন বাইল বা পিও রস তৈরি করে, যা পরিণামে লিভারে ফ্যাট জমতে বাধা দেয়। তাই যাদের ফ্যাটি লিভারের সমস্যা রয়েছে তারা সপ্তাহে অন্তত একটি কোয়া রসুন খান।
অতিরিক্ত ঠাণ্ডাতে রসুন শরীরের তাপমাত্রা ভারসাম্যে রেখে দেহকে গরম করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে করে দ্বিগুণ শক্তিশালী।
প্যারালাইসিসের রোগীদের শরীরে রক্ত প্রবাহ সঠিকভাবে চালনার জন্যও রসুন ভীষণ জরুরি। ছোটদের খাবার তরকারিতেও রসুন দেওয়া উচিত। এতে রসুন খেয়ে তারা অভ্যস্ত হবে এবং দেহের ক্ষতিকর জীবাণুগুলোও মরবে।
আচারের মধ্যে যে রসুন গুলো বছরের পর বছর সংরক্ষণ করা হয়, সেই রসুন এর পুষ্টি গুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই রসুন কাঁচা খাওয়াই ভালো।
কাঁচা খেতে না পারলে রান্না তে রসুন থাকা টা জরুরী। রসুন রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়িয়ে তোলে।
তবে করোনা মহামারীর বিরুদ্ধে রসুন যুদ্ধ করতে পারবে, এমন যুক্তি এখনো কোন গবেষণায় প্রমাণিত হয়নি।
লেখকঃ
ফারহানা মোবিন,
ডায়াবেটোলোজি ,
বারডেম হসপিটাল
স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক- অগ্রদৃষ্টি